গঙ্গাচড়ায় ভোটারদের মুখোমুখি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা


প্রকাশক প্রকাশের সময় : মে ২২, ২০২৪, ৩:৩১ PM /
গঙ্গাচড়ায় ভোটারদের মুখোমুখি উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা

রংপুরের গংগাচড়ায় ৩য় ধাপে হতে যাওয়া উপজেলা নির্বাচনের বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটারদের মুখোমুখি হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সংগঠন ‘পিস ফেসিলিটেটর গ্রুপ-পিএফজি’ গঙ্গাচড়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘জবাবদিহিতায় জনতার মুখোমুখি প্রার্থীরা’শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এতে ২৯ মে হতে যাওয়া তৃতীয় দফায় গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৫ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, তিন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ২ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী একত্রিত হন।একে অপরের হাতে হাত রেখে মঞ্চে দাঁড়ালে করতালি দিয়ে ভোটাররা তাদের অভ্যর্থনা জানান।এরপর উঠে আসে উপস্থিত ভোটারদের নানা প্রশ্ন ও অভিযোগের কথা।

ভোটাররা বলেন, নির্বাচন এলেই প্রার্থীরা ভালো ভালো কথা বলেন; নানা প্রতিশ্রুতিও দেন। মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। তখন সব প্রার্থীই ভোটারের কাছের মানুষ হয়ে যান। অথচ ভোট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীরা ভোটারের কথা ভুলে যায়।

তারা অঙ্গীকার করে বলেন, বিগত দিনের মত এমন চর্চা ভবিষ্যতে আর হবে না। এবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সর্বদা জনগণের কাছে জবাবদিহির মাধ্যমে এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য,মাদক নির্মূল, কর্মসংস্থান ও আইনশৃঙ্খলা সহ সামাজিক নানা উন্নয়নে কাজ করে যাবেন।

 অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাধারণ ভোটাররা হাত মুষ্টিবদ্ধ করে শপথে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করেন- তারা অসৎ, দুর্নীতিবাজ, কালোবাজারি, ঘুসখোর, চাঁদাবাজ,ভূমি দস্যু কোনো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন না।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সদস্য মোকাররম হোসেন সুজন বলেন, “আমি নির্বাচিত হলে সরকারি বরাদ্দ অপচয় রোধে কাজ করব। যুব সমাজকে মাদকমুক্ত করব। সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সমাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করব।

একই পদের আরেক প্রার্থী সাইয়েদুজ্জামান ফুলু বলেন , “সংঘাতবিহীন নির্বাচন করতে আমি সদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একটি উৎসবমুখর নির্বাচন আমার প্রত্যাশা। আমার কাছে রাজনীতি হলো সমাজসেবা, দুর্নীতি করে টাকার পাহাড় গড়া নয়।”

প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি পর্বে গঙ্গাচড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, “৫ বছর চেয়ারম্যান আছি। চেষ্টা করেছি, জনগণের সেবা করার। অফিসে, বাড়িতে, বাইরে সব সময় মানুষের সমস্যা শুনেছি। আমি চাই, সামনের নির্বাচন অবাধ হোক। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিক। যে কোনো রায় মাথা পেতে নেবে।”

চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচিত হলে শিল্প সংস্কৃতির উন্নয়নের মাধ্যমে একটি অহিংস সমাজ গড়ব। উন্নত কৃষির আবির্ভাব ঘটিয়ে কৃষকের ভাগ্য বদলাব।”

 জাতীয় পার্টির মনোনীত পদপ্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, “নারী ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান হবে তার মূল লক্ষ্য।”

ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাজু মিয়া লাল বলেন, ৫ বছর ভাইস চেয়ারম্যান আছি। চেষ্টা করেছি, জনগণের সেবা করার।“ এবার নির্বাচিত হলে সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নে কাজ করে যাব।”আরো বক্তব্য রাখেন, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কৃঞ্চ চন্দ্র রায়, নিখিল চন্দ্র।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবীবা আক্তার সিমা বলেন, “আমি নির্বাচিত হলে ক্ষমতাকে নিজ স্বার্থে নয়, মানুষের স্বার্থে ব্যবহার করব। মানুষকে মূল্য দিব।” আরো বক্তব্য রাখেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মিনা বেগম।

দি হাঙ্গার প্রজেক্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার দিলীপ কুমার সাহার সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন,পিএফজির সদস্য ও গঙ্গাচড়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আঁখের মিঞা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পিএফজির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, পিএফজির সদস্য সাংবাদিক আব্দুল বারী স্বপন, পিএফজির সদস্য সাংবাদিক সুজন আহম্মেদ, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রাজেশ, ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেম (আইএফইএস) প্রতিনিধি মেহেদি হাসান বাবু, হাঙ্গার প্রজেক্টের এরিয়া সমন্বয়কারী শামসুদ্দিনসহ সাধারণ ভোটারগণ।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গ্রামের ৫০ জন নারী এবং ১০০ জন পুরুষ ভোটার অংশগ্রহণ করেন।